প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৪, ২০২৫, ৭:০৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ২, ২০২৫, ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ
সক্ষমতার নতুন অধ্যায়ে মোংলা বন্দর
নতুন অর্থবছরের শুরুতেই মোংলা বন্দরের জেটিতে একসঙ্গে চারটি বড় বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করেছে। দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির এক নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে এই ঘটনার মাধ্যমে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মাকরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার সকালে এই তথ্য জানানো হয়।
তিনি জানান, "১ জুলাই বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী কন্টেইনারবাহী জাহাজ ‘কোটা রেস্টু’। এটি ২৯৯ টিইইউজ কন্টেইনার নিয়ে এসেছে। ৬ নম্বর জেটিতে রয়েছে পানামার পতাকাবাহী ‘এম টি হাইহং’, যার বহরে রয়েছে চিটাগুড়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মেশিনারি নিয়ে ৭ নম্বর জেটিতে অবস্থান করছে সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী ‘এমভি হিস্ট্রি এডুয়ার্ড’। আর ৯ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে পানামার পতাকাবাহী ‘এমভি ডিএস প্রসপারিটি’, যা নিয়ে এসেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির যন্ত্রাংশ।"
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাত্র কয়েক বছর আগেও মোংলায় বড়জোর দুটি জাহাজ একসঙ্গে জেটিতে ভিড়ত। নাব্য সংকট, জেটির ঘাটতি আর আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে তখন এর বেশি সম্ভব ছিল না।
চিত্রটা বদলাতে শুরু করে বড় পরিসরে চ্যানেল খনন, নতুন জেটি নির্মাণ, আধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত হওয়া এবং পদ্মা সেতু চালুর পর। ফলে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ে মোংলা বন্দরের দিকে।
মোংলা বন্দর ইস্টিভিডর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মো. জুলফিকার আলী বলেন, “আগে দুটি জাহাজ একসঙ্গে জেটিতে থাকলে সেটা বড় ঘটনা ছিল। আর এখন দেখছি চারটি বড় জাহাজ একসঙ্গে জেটিতে। এটা নিঃসন্দেহে মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বড় উদাহরণ।”
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু চালুর পর আমদানি-রপ্তানিকারকদের কাছে মোংলা এখন বড় ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে। তারা আর শুধু চট্টগ্রামের দিকেই তাকিয়ে নেই।”
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোংলায় ১২০৬টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এসেছে। এটি বন্দরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একই সময়ে প্রায় ২৫ হাজার টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০০ কোটি টাকা, রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা।
বর্তমানে বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙরে ১৪টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব জাহাজে রয়েছে কয়লা, চাল, সার, ক্লিংকার, এলপিজি, পাথর এবং বিভিন্ন শিল্প ও প্রকল্পের যন্ত্রাংশ।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন এবং দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মোংলা বন্দর এখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বারে পরিণত হয়েছে।
কপিরাইট © সংবাদ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত