চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রভাব বিস্তার করে প্রতিপক্ষের জমিতে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের অভিযোগ।
ভুক্তভোগী মোঃ আঃ রহিম ভুঁইয়া দাবি করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭ নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাশারা গ্ৰামে তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমিতে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রভাব বিস্তার করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের সম্পত্তির মালিক আব্দুর রহিম, পারুল বেগম, কুলসুম বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন জানায়, সম্প্রতি বিবাদী পক্ষের রতন, মোশারফ হোসেন কালু,মান্নান ভূঁইয়া, মোতালেব ভূঁইয়া, মানিক, খোকন মিজি, রাজ্জাক শেখ, শামসুল নাহার লিজা,বাবুল ভূইয়া, হাজেরা বেগম, রাজ্জাক শেখসহ বহিরাগত ব্যক্তিদের দিয়ে সেখানে থাকা অনেকগুলো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে আমাদেরকে ফাঁসিয়ে দেয়। সেই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসে উপজেলা কার্যালয়ের নিয়ে যায়। তখন ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি মুচলেখা দিয়ে আসতে হয়েছে।এছাড়াও বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এতে আমাদের পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল বলছে, সম্পত্তি দানের নামে নিরীহ মানুষের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে সরকারের মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাঁধাগ্রস্থ করা নোয়াবআলী গংয়ের বিচারের দাবি ও নিরীহ মানুষের সম্পত্তি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি
ভুক্তভোগী পরিবারের।
এছাড়াও আদালতে দায়েরকৃত মামলা সুত্রে
জানাযায়, প্রভাবশালী ভূমিদস্যু নওয়াব আলী ভূঁইয়া ও মনোয়ারা বেগম দাতা সেজে কাশারা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার
পরিকল্পনার মন্ত্রনালয়ের সচিবকে
ফরিদগঞ্জ সাব রেজিষ্টার অফিসে
উপস্থিত হয়ে ৮ শতক ভূমি রেজিষ্ট্রি মূলেদান করেন।যার দলিল নং ৬১৭৭/১৮। তিনি উক্ত দানকৃত দলিলে সিএস-৯৪, আরএস-১৩৩,
বিএস চূড়ান্ত ৬৮৪/৬২৬ দাগ নং
সিএস ১৩৮১ ও ১৩৮২ দাগ হয় এবং
বিএস ২৫৬৬ দাগে মোট ০৮ শতক জমি উল্লেখ করেন।
পরবর্তিতে সম্পত্তি দাতা মামলার
বিবাদী গংয়ের সরজমিনে দলিলে
উল্লেখিত দাগ অনুযায়ী সম্পত্তি না দিয়ে বরং মামলার বাদির ২৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৮ শতাংশ ভূমি জোরপূর্বক দখল
করে তা বুঝিয়ে দেন। অপরদিকে দাতার দানকৃত সম্পত্তি ও সরজমিনে বুঝিয়ে
দেয়া সম্পত্তির দাগ ও খতিয়ান ভিন্ন রয়েছে। অথচ দখলীয় ভূমির সিএস-৯৪,
আরএস-১৩৩, বিএস চূড়ান্ত ৪৫৭ চূড়ান্ত খতিয়ান সঠিক থাকলেও সিএস
১৩৮০ এবং বিএস ২৫৬৮ দাগ। শুধু তাই নয়, এই উল্লেখিত দাগে ২৬ শতাংশ ভূমি রয়েছে।
মামলার বাদিপক্ষ গরীব ও অসহায় হওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন এ ধরনের কর্মকান্ড চালিয়েছেন।
অপরদিকে সরকারকে সম্পত্তি দান করা
হয়েছে এবং দানকৃত সম্পত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান হবে এই কথাটিকে প্রতিষ্ঠা
করে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু নওয়াব আলী ভূঁইয়া স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ও স্থানীয়
প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে উক্ত দাগের মধ্যে ৮
শতাংশ ভূমি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্য বুঝিয়ে দেন।
একপর্যায়ে সম্পত্তির মালিক আব্দুর রহিম বাদি হয়ে ৫ জনকে বিবাদী করে
সিনিয়র সহকারি জজ আদালত ফরিদগঞ্জ আদালতে দেওয়ানী মামলা নং
৩৮১/২১ ইং দায়ের করেন। আদালতে উক্ত মামলা আমলে নিয়ে বিবাদীদের
এ বিষয়ে জবাব বা শোকজ করে ৭ দিনের মধ্যে জবাব চাইলে, নির্ধারিত
সময়ে জবাব না দেওয়ায় উক্ত সম্পত্তিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এদিকে এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় বাদী পক্ষ আদালতে দেওয়ানী উচ্ছেদ মোকাদ্দমা দায়ের করে। যার নং ৪৫০/২১ ইং যা
চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, কাশারা কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক এর বিষয়টি আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, মামলার রায়ের উপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। যতদিন পর্যন্ত রায় না হয় ততদিন পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক এর সেবা চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া বলেন, কাশারা হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিকের জমি সংক্রান্ত বিষয়টি আমি অবগত আছি, ও সে বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলার রায় সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।