চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদি গ্রামের চৌধুরী বাড়ীর বাসিন্দা মনির চৌধুরীর স্ত্রী নাজমা বেগম। তিনি একই বাড়ির বাসিন্দা ও পতিত সরকারের দোসর মৃত গোলাম মাওলা চৌধুরীর ছেলে গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর ষড়যন্ত্র, প্রভাব ও অপচেষ্টার কারণে নিজ সম্পত্তিতে বসতি উঠাতে পারছেন না। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি নানাভাবে হয়রানি ও নাজমা বেগমের ছেলে মারুফ চৌধুরীকে মারধর করে আহত করেছেন। তার অত্যাচরে অতিষ্ঠ এই পরিবার ইতোমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ, আইনজীবী দিয়ে উকিল নোটিশ দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছে না। বিষয়টি সামাজিকভাবে বসেও সমাধানে আসতে নারাজ অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা চৌধুরী গংরা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাড়ি মনোহরখাতি হলেও থাকেন ঢাকায়। তিনি বিসিবির সাথে জড়িত। যে কারণে খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও পতিত হাসিনা সরকারের দাপুটে লোকদের সাথে তার সখ্যতা ছিল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি বাড়ির নাজমা বেগম পবিারকে নানাভাবে হয়রানি করছে।
তার এহেন কর্মকান্ড এবং নাজমা বেগম পরিবারে তার সংঘবদ্ধ চক্রের লোকদের মাধ্যমে সীমানা প্রাচীর তৈরী করা, নাজমা বেগমের ছেলে মারুফ চৌধুরীকে মারধর করে আহত করা, হুমকি ধমকি দেয়া অব্যাহত রেখেছেন।
এসব অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে রক্ষায় নাজমা বেগম চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী সরকার মো. আতাউর রহমান (আতাউর) এর মাধ্যমে গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, গোলাম রাজা চৌধুরী, গোলাম আশিকুর রহমান চৌধুরীকে উকিল নোটিশ দিয়েছেন।
ওই নোটিশে নোটিশ গ্রহিতাগণকে নাজমা বেগম পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচারসহ নোংড়া কর্তবার্তা থেকে বিরত থাকা এবং তার নিজস্ব .০০৭৫ একর ভূমি ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। কারণ অবৈধভাবে তার সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়াও নাজমা বেগম একই বিবাদীদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং মনোহরখাদি মৌজা বিএস ৫৫৫, খারিজ খতিয়ানে ৭৫১, বিএস ৮৬৫, মোঃ .০০৪ একর, বিএস ৮৬৬ দাগে মোঃ .০০৬৭ একর, বিএস ৮৬৭ দাগে মোঃ .০৫০৯ একর, বিএস ৮৬৮ দাগে মোঃ .০০২৭ একরসহ মোট মোঃ ০.৮৭৩ একর সম্পত্তির মালিক। কিন্তু বিবাদীরে কারণে তিনি উল্লেখিত সম্পত্তিতে ভোগ দখলে যেতে পারছেন না।
অপরদিকে নাজমা বেগমের ছেলে মারুফ চৌধুরী একই বাড়ির বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, গোলাম রাজা চৌধুরী বিরুদ্ধে চলতি এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে তাকে মারধরের ঘটনায় সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানাগেছে, ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে মারুফ নিজের সম্পত্তিতে প্রবেশ করলে গোলাম মোস্তফা চৌধুরী তাকে বাঁধা দেয়। একই সময় গোলাম রাজা চৌধুরী ও নেওয়াজ চৌধুরী ফোনের মাধ্যমে ডেকে এনে সংঘবদ্ধ লোকজন দিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরতর আহত করে এবং তার সাথে থাকা ১১ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তখন আশপাশের লোকজন মারুফের চিৎকার শুনে সেখান থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এতেও তারা খান্ত হয়নি। তারা মারুফকে চিকিৎসা করে আসলেও আবার প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।
মারুফ চৌধুরী বলেন, তারা আমাদের সম্পত্তির আরএস, সিএস ও বিএস খতিয়ান ও খারিজসহ সকল কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বাড়ি তৈরী করতে দেয় না। তারা সামাজিকভাবেও এই বিরোধের সমাধানে আসে না। আমি ও পরিবারের সদস্যরা সব সময় বিবাদীদের হুমকি ও ধমকিতে থাকছি। এই বিষয়ে আমি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ গোলাম মোস্তফা চৌধুরী নিজে একজন পতিত শেখ হাসিনা সরকারের চিহ্নিত দোসর। তাকে এবং তার সংঘবদ্ধ চক্রের লোকদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনলে ঐতিহ্যবাহী চৌধুরীর বাড়িতে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
