ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৭ মার্চ ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সেলিমের ক্ষমতার দৌরাত্ম্য

মুসাদ্দেক আল আকিব
মার্চ ২৭, ২০২৫ ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চাঁদপুরে স্বাস্থ্য খাতে বেপরোয়া দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের মূল হোতা কথিত অফিস সহায়ক মো. সেলিম হোসেনের ক্ষমতার উৎস নিয়ে জেলাব্যাপি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের কর্তাব্যক্তিরাও জানতে চান কী ক্ষমতা বলে সেলিম তার অপরাধের সাম্রাজ্য ধরে রেখেছেন। এমনকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চলিত বছরের ১৯ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো তাকে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করে। দীর্ঘদিন তার অপরাধে জড়িত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের সাথে যে সখ্যতা গড়ে তুলে। ওই ক্ষমতা বলে সেলিম বদলিকৃত বিরামপুরে যোগদান না করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশ পরিবর্তন করে গত ২৭ জানুয়ারি সে পাশবর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করে।

অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সেলিমের এই অদৃশ্য ক্ষমতার উৎস নিয়েই এখন চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের চলছে তোলপাড়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সেলিমের এমন ক্ষমতার অপব্যবহার অব্যাহত থাকলে সে দ্রুত সময়েই চাঁদপুরে বদলি হয়ে আসবে এবং আবার তার সিন্ডিকেটের বলয় গড়ে তুলবেন।

তবে তার এই ক্ষমতার উৎস সম্পর্কে সেলিমের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, তার এক নিকটাত্মীয় দুদকের উপ-পরিচালক পদে কর্মরত রয়েছেন। দুদকের সেই নিকটাত্মীয় কর্মকর্তার মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেই পাশবর্তী জেলায় পদায়ন নেয়।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ সেলিম পাশবর্তী রায়পুর উপজেলায় বদলি হওয়া মানে তার অর্জিত অবৈধ সম্পত্তি রক্ষায় মূলত নিকটবর্তী এলাকায় বদলি বা পদায়ন। তার এই অদৃশ্য ক্ষমতা অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় চাঁদপুরে ফিরলে অবকা হওয়ার কিছুই থাকবে না বলে দাবি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের।

অভিযোগ আছে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের গত দেড় দশকে চাঁদপুর জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে সর্বসাধারণের স্বাস্থ্যের উন্নতি না হলেও কথিত অফিস সহায়ক সেলিম হোসেনের অবৈধ সম্পত্তির স্বাস্থ্যের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। যা রীতিমতো আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে যাওয়ার মতো। তবে বেপরোয়া দুর্নীতিবাজ সেলিমদের সম্পত্তির হিসাব কিংবা বিচার কোনোটাই হবে কী না; তা নিয়েই এখন দেখা দিয়েছে সংশয়।

অবৈধ সম্পত্তি অর্জন ও রাজনৈতিকভাবে চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিমের সাথে যোগাযোগ করলে এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তবে চাঁদপুর শহরের নাজিরপাড়ায় ৮৫১ হোল্ডিংয়ের আলিশান চকচকে নতুন বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া পৌর কর্মচারী প্রভাবশালী শাহজাহান মাঝি তার বন্ধু বলে দাবি করেন সেলিম।

এছাড়া যাদের নিয়ে সেলিমের স্বাস্থ্য বিভাগের সিন্ডিকেট; সাবেক নারী মন্ত্রীর বড় ভাই মাফিয়া খ্যাত জেআর ওয়াদুদ টিপু, মন্ত্রীর আস্থাভাজন জাহিদুল ইসলাম রোমান, আইয়ুব আলী বেপারী, মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল তাদের কাউকেই চিনেন না বলে দাবি করেন সেলিম। তবে তাদের কেউ কেউ রাজনীতি করতেন বলে সেলিম জানান।

অভিযোগ আছে, স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান মালিকদের নতুন আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা কিংবা উপজেলায় প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদন দিয়ে থাকে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ওই আবেদনের ভিত্তিতে জেলা সিভিল সার্জন, চাঁদপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একজন মেডিকেল অফিসার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদন করতো। কিন্তু সেখানেও অভিযোগ রয়েছে চাঁদপুর কিংবা উপজেলাগুলোতে এসব প্রতিষ্ঠান হবে কী হবে না; তা নির্ভর করতে কথিত অফিস সহায়ক সেলিমের ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছার ওপর। কারণ ওই তিন সদস্যের প্রতিবেদন কিংবা স্বাক্ষর সেলিম নিজেই দিয়ে তথ্য প্রেরণ করত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। তিনি সিভিল সার্জনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেন। এমন এক অভিযোগে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থার কারণে তার বেতন ভাতাও বন্ধ হয়। এক্ষেত্রে সেলিমের ক্ষমতার দৌরাত্ম্য এতটাই বেশি ছিলো এসব শাস্তি এড়িয়ে সে খুব দ্রুত সময়ের আবারও স্ব-অবস্থানে বহাল হন।

এমন অভিযোগের বিষয়ে সেলিম দাবি করেন সে কিংবা তার সিভিল সার্জন অফিস জেলার কোন প্রাইভেট হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনিস্টিক সেন্টার অনুমোদন কিংবা সহযোগিতা করেননি। এগুলোর মালিক পক্ষ অনলাইনের আবেদনের প্রেক্ষিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মতান্ত্রিক অনুমোদন দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগই ফালতু কথা।

দাপ্তরিক তথ্যে জানাগেছে, ১৯৯২’ সালে শিক্ষা স্বাস্থ্য প্রকল্পে ‘অডিও-ভিজ্যুয়াল হেলপারে’র চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে যোগদানের বিষয়ে তার দাবি শিক্ষা স্বাস্থ্য প্রকল্পে কখনোই চাকুরি করেননি। তবে ‘অডিও-ভিজ্যুয়াল হেলপারে’র হিসেবে প্রথম যোগদান করেন। এছাড়া ২০০৬ সালে অধিদপ্তর তাকে নিজ বেতনে অফিস সহায়ক পদে পদায়ন করে এবং এ পদেই তার চাকুরি স্থায়ীকরণ করা হয় বলে সেলিম দাবি করেন। কিন্তু তার এমন দাবীর প্রেক্ষিতে কোন নথিপত্র চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে রক্ষিত নেই। এছাড়া সেলিমের ব্যাক্তিগত ফাইলের সকল তথ্য সে নিজেই সরিয়ে ফেলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।

সরকারি চাকরির বিধান মতে, কর্মকর্তা-কর্মচারি গড়ে ৩ বছরের ভিতরে কম বেশি বদলি হলেও চতুর্থ কিংবা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা বছরের পর বছর একই পদে দায়িত্ব পালন করে আসছে। আবার এসব কর্মচারিরা নিজ জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে দুর্নীতির এমন স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। কর্মকর্তারাও অনেক সময় এই সিন্ডিকেটের সদস্য হয়ে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। আর ভেঙে দিয়ে গেছেন চাঁদপুরের স্বাস্থ্যবিভাগের শৃঙ্খলা। (চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের বিষয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে)।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: