মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজে অনিয়মের ধারাবাহিক প্রতিবেদন পর্ব-৩

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজ। জাতীয় করণের পর এই কলেজটির সার্বিক উন্নয়ন হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে চিত্র উল্টে যায়। অধ্যক্ষ নিয়োগ চলে যায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি চক্রের হাতে। এই চক্রের অঘোষিত প্রধান তৎকালীন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।

প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে নিয়োগ দিতে পুরো পরিকল্পনার ছক তৈরী করেন রতন। জামায়াত সমর্থিত মাছুম বিল্লাহ নামে শিক্ষককে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গিয়ে ধকলে পড়ে চক্রটি। তদ্বির শুরু হয় আজাদ নিয়োগ প্রক্রিয়া। তবে প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এই বিষয়ে সবকিছু জানার পরও চক্রের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের পর এই কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই সুযোগে আজাদ নিজ এলাকায় আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং তদ্বির শুরু হয়। তার এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারসহ আবুল কালাম আজাদের এক ভাই তদ্বিরে সহযোগিতা করেন। নিজ ভাই তার নিয়োগে তদ্বির প্রক্রিয়া চালিয়েছেন এই তথ্য আজাদ নিজেই স্বীকার করেন।

রতন কুমার মজুমদার চক্র যেভাবে বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন তার অংশ হিসেবে মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের আজাদ নিয়োগ প্রক্রিয়ার একটি লিখিত তথ্য এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে জানাগেছে, আজাদকে নিয়োগ দেয়ার জন্য রতন কুমার মজুমদার সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির বড় ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু বরাবর চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে তিনি নিয়োগের বিষয়ে গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি উল্লেখ করেন আমাদের পরিকল্পনার বাকী কাজ ‘ছাত্রলীগ দেখবে’। ওই চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়-বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নিকটতম ব্যাক্তি জুয়েল, অসিতসহ সবাই ইতিবাচক আছে।

আবুল কালাম আজাদ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের জন্য তার ভাই চক্রটির সাথে আর্থিক লেনদেন করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি কোন আর্থিক লেনদেন করা হয়নি। অন্য কেউ করছে কিনা আমি বলতে পারবোনা।

অধ্যক্ষ এই লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করলেনও স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, অধ্যক্ষ আজাদের ভাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ডিও লেটার নেয়ার জন্য তৎকালীন স্থানীয় সাংসদকে নগদ টাকাসহ বিভিন্ন উপটোকন উপহার দেয়া হয়।