চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার উজানি গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সোলায়মান মিয়া ও তার স্ত্রী রৌশন আক্তার পরিবারকে রাজনৈতিক প্রভাব ও পেশিশক্তি ব্যবহার করে নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানির করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগ সোলায়মান মিয়ার ভাতিজা মো. ইব্রাহীম নিলয় ও সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের মধ্যে ইব্রাহীম স্থানীয় যুবলীগ নেতা। তার নেতৃত্বেই এই পরিবার নির্যাতনের শিকার বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সোলায়মান মিয়া উজানি গ্রামের আঃ ছামাদ মাষ্টারের ছেলে। ছামাদ মাষ্টারের ৫ ছেলে। সকলেই একই বাড়িতে বসবাস করেন। পিতা-মাতা থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে তারা কোন ধরণের আপোষ বন্টক না করে সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন। তাদের মধ্যে কোন ধরণের বিবাদও ছিলো না। কিন্তু হঠাৎ করে গত কয়েকমাস আগ থেকে অভিযুক্ত ইব্রাহীম তার বাবা সম্পত্তি পাবেন এমন অভিযোগ তুলে সোলায়মান মিয়া পরিবারের ওপর শারিরীক নির্যাতন, নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। এমনকি ইব্রাহীম তার জেঠা সোলায়মান মিয়াকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছেন।
সোলায়মান মিয়া বলেন, আমার পিতা-মাতা প্রাপ্ত সম্পত্তিসহ ভাইদের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে আমি ৪৪০.৪ একর সম্পত্তির মালিক। এসব সম্পত্তির সকল কাগজপত্র আছে। কিন্তু হঠাৎ করে ভাতিজা ইব্রাহীম আমার কাছে সম্পত্তি পাবে বলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমর পরিবারের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে। সামাজিকভাবে বসার পরও ইব্রাহীম ও আরেক ভাতিজা সাখাওয়াত হোসেন খারাপ আচরণ করেছে। এসব বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার পরও তারা পেশি শক্তি ব্যবহার করে আসছে। যে কারণে আমি ও আমার স্ত্রী এখন বাড়ি ছাড়া। আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়ে আছি। আর সম্পত্তিগত বিষয় স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ভাতিজা ইব্রাহীম যুবলীগের রাজনীতির সাতে জড়িত। কিন্তু সে ৫ আগস্টের পর উপজেলা ও স্থানীয় বিএনপির নামধারী নেতাদের সাথে নিয়ে আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন আরো বাড়িয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে এসব নির্যাতনের বিচার দাবী করছি।
সোলায়মান মিয়ার স্ত্রী রৌশন আক্তার বলেন, ইব্রাহীম ও তার বোন জামাতা আমার সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেছে। তাদের হুমকি ধমকির কারণে আমরা এখন বাড়ি ছাড়া।
এদিকে উজানি ছামাদ মাষ্টার বাড়ি ও বাজারে গিয়ে কথা হয় অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে। তারা বলেন, ইব্রাহীম হঠাৎ করে চাচা-জেঠাদের কাছে সম্পত্তি পাবে বলে দাবী করে এবং খারাপ আচরণ শুরু করে। এসব বিষয় নিয়ে বৈঠক হলেও কোন ধরণের সমাধানে আসা সম্ভব হয়নি। সোলায়মান মিয়া আদালতের আশ্রয় নিয়েছে। আর ইব্রাহীম বলে বেড়াচ্ছে সে তার জেঠার কাছে ৪৪ শতাংশ জমি পাবে। তবে তার কাছে সম্পত্তি পাবে বলে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। মুখে মুখে হিসাব দিচ্ছে সে সম্পত্তির মালিক।
জেঠার পরিবারের ওপর শারিরিক নির্যাতন ও নানাভাবে হয়রানি প্রসঙ্গে ইব্রাহীম নিলয় বলেন, দাদা-দাদীর কাছ থেকে চাচা ও ফুফুরা যে সম্পত্তি পেয়েছে, ওই সম্পত্তিতে আমার বাবারও সমান ভাগ আছে। সে হিসেবে আমি ৪৪ শতাংশ জমি পাওনা। আমার সম্পত্তি বুঝিয়ে না দেয়ার কারণে আমার জেঠা সোলায়মান মিয়ার সাথে বিরোধ হয়েছে। তবে আমি শারিরীক নির্যাতন করিনি। তিনি আমার বাবার সম্পত্তি দেখবাল করে রেখেছেন এবং এখন ওই সম্পত্তি তিনি নিজের দাবী করেন।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মৃত শাহজাহানের ছেলে ইব্রাহীম নিলয় আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে সে স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট ব্যবসা করেন। ৫ আগস্টের পর নিজেকে রক্ষায় বিএনপি নামধারী নেতাদের কাজে লাগিয়ে এসব অপকর্ম করে আসছেন।