চাঁদপুর আদালতের বন্টন মামলার রায় থাকার পরও হাজীগঞ্জ বাজারে বিশ্বরোড চৌরাস্তার পাশে জোরপূর্বক ভূমি দখলের অভিযোগ করেন বিধু ভূষন সাহা গং। স্থায়ী পাকা করন কাজ বন্ধ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করা হয়।
বিধু ভূষন সাহা গং অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ভূমির মধ্যে নালিশী সাবেক দাগ ৫১৯ দাগে ২.৩১ একর ভূমি নিয়ে চাঁদপুর আদালতে বন্টন মামলা হয় ২০০৯ সালে। মামলা নং ৩২/২০০৯। উক্ত বন্টন মামলায় আদালত কতৃক সিভিল কোর্ট কমিশনার নিয়োগ হয়। অতঃপর কোর্ট কমিশনার উভয়পক্ষের আইনজীবীদের নোটিশ করার মাধ্যমে বাদী ও বিবাদীপক্ষের উপস্থিতিতে আদালতের সার্ভেয়ার মারফত সরেজমিনে নকশা প্রস্তুত করে, কোর্ট কমিশনার প্রতিবেদন ও নক্সা আদালতে সাবমিট করলে সে মোতাবেক মামলার রায় হয় ২০১৫ সালে। বন্টন মামলার রায় দোতরফা (উভয়পক্ষের প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহন) সূত্রে আমাদের পক্ষে আসে। এতে আদালত আমাদেরকে সিএন্ডবি রাস্তার সাথে ৪৬' (ছেচল্লিশ ফুট) মুখ দিয়ে ১০(দশ) শতাংশ ভূমি প্রদান করেন।পরবর্তীতে আপিল ১২৮/২০১৫ নং মোকদ্দমা দায়ের হয়। সেই আপিল মামলায় আদালত পূর্বের রায় বা নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে রায় ঘোষনা করেন ২০২১ সালে। এই মামলায় ২০১৫ সালে আদালত কর্তৃক সার্ভেয়ার নিয়োগ দেয়। সার্ভেয়ার কর্তৃক ভূমির উপর একটি নকশা তৈরি করে। কিন্তু আদালতের সেই আপিল মামলার রায়ের সিদ্ধান্ত ও সার্ভেয়ার কর্তৃক নকশা না মেনেই মকিমাবাদ ০৫ নং ওয়ার্ডের (যুগি বাড়ীর) মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আনোয়ারুল আজিম হিরা ০৫ আগষ্টের সাবেক সরকার পতনের পর দেশের এই অস্থিতীশীল মূহুর্তে স্থায়ী ভাবে দখলে নিতে তড়িঘড়ি করে দিনে ও রাতে ফাউন্ডেশন নিয়ে কাজ শুরু করেন।
গত ১৬ নভেম্বর যখন সারা দেশের ন্যায় হাজীগঞ্জে চাঁদপুর কুমিল্লা মহা সড়কের পাশে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান করে সড়ক বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন। সেই সময়ে আমরা হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ থানায় উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে আদালতের রায় অনুযায়র স্থানীয় ভাবে মাপঝোপ করে সীমানা নির্ধান করা হবে এমন সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আনোয়ারুল আজিম হিরা হাজীগঞ্জ থানার সিদ্ধান্ত না মেনে, জোর পূর্বক নির্মানকাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে কোন উপায়ান্তী না পেয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেই। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিনে সহকারী কমিশনার ভূমি, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে নির্মানকাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় এবং আগামী ১৯ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের কাজ পত্র পর্যালোচনা করে, সরজমিনে মাপঝোপ করে সিমানা নির্ধারন না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন।
বিধু ভূষন সাহা গং আরো বলেন, উক্ত বন্টন মামলার রায় অনুযায়ী হাজীগঞ্জ থানাধীন সি এস/এস এ-২১৩, বি এস ৮৩নং মকিমাবাদ মৌজা সি এস-৩১০, এস এ-৪৮০, বি এস ১০০০নং খতিয়ান ভুক্ত বি এস-৮৫১নং দাগে পুকুর ০.০১১৫একর (এক শতক পনেরো পয়েন্ট) ভূমি ও ৮৪৯ নং দাগে বাড়ী ০.০১৮৫ একর (এক শতক পঁচাশি পয়েন্ট) ভূমি একুনে উভয় দাগে ০.০৩০০ একর (তিন শতক) ভূমি নিয়া রেকর্ড সংশোধনের জন্য বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল চাঁদপুর আদালতে ৩৫৮/২০১৯ইং নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। যা এখনো চলমান। তিনি আরো বলেন, আনোয়ারুল আজিম হিরা এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজন আদালতের আইনকে অমান্য করে গায়ের জোরে এবং পেশিশক্তি বলে আমাদের দখলীয় উক্ত দাগের ভূমিতে বিল্ডিং নির্মান করার জন্য ইট বালু রড সিমেন্ট এবং বিল্ডিং নির্মানের অন্যান্য সরঞ্জামাদী নিয়ে বিল্ডিং নির্মানের চেষ্টা করে আমাদের দখলীয় ভূমি হইতে উচ্ছেদ করে আমাদের বেদখল দেওয়ার জন্য পায়তারা করে যাচ্ছে। এতে আমারা বাধা প্রদান করতে গেলে দাঙ্গা, হাঙ্গামা, খুন, জখম করবে বলে হুমকি দেয়। এবং কোন প্রকার বাড়াবাড়ী বা মামলা মোকদ্দমা করলে আমাদেরকে প্রকাশ্যে মারবে বলে হুমকি ধমকি দেয়। এতে আমাদের পরিবারের জানমাল ও ভূমির ক্ষতির সম্ভাবনা বিদ্যমান।
বিধু ভূষন সাহা গং আরো বলেন,
আদালতের বন্টন মোকদ্দমার রায় অনুযায়ী ৪৬' (ছেচল্লিশ) ফুট মুখ বাদ দিয়া মাপঝোপ করে আমাদের প্রাপ্য জায়গা বাদ দিয়ে আনোয়ারুল আজিম হিরা তাঁর সম্পত্তির উপর পাকা ভবন নির্মান করুক।
জোরপূর্বক ভবন নির্মান বিষয়ে আনোয়ারুল আজিম হিরা এর সাথে যোগাযোগ করলে তাহারর ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।